Tuesday, September 9, 2014

আমাদের সংগঠনের নীতিমালা ও চুক্তিপত্র


 বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

* প্রথমেই আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা একটি সংগঠন, একটি ঐক্যবদ্ধ দল। আমরা অনেক কিছুই করতে পারি। শুধু আমাদের শুরু করার মত সাহস রাখতে হবে।

* আমাদের মূল উদ্দেশ্য  হচ্ছে নিজেদের মূলধন, দক্ষতা, বুদ্ধি ও কঠোর শ্রমের সমন্বয়ে ন্যায়সঙ্গত উপায়ে ব্যবসায়ের জন্য সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করা।

* আমাদের মূলভিত্তি হচ্ছে চুক্তিপত্র। সুতরাং চুক্তিপত্রের যেকোন প্রকার অবহেলা আমাদের ব্যবসায়ের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরুপ। 
                                                   চুক্তিপত্র
১.  ব্যবসায়ের একটি ইউনিক নাম থাকবে।

২.  প্রত্যেক অংশীদারদের নাম, ঠিকানা, ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট কপি চুক্তিপত্রে লিপিবদ্ধ থাকবে।

৩.  সদস্য সংখ্যা হবে সর্বচ্চ ৫ জন। এদের বাইরে ব্যবসায়ের প্রয়োজনে নতুন কোন সদস্যের প্রয়োজন হলে তাদেরকে Investor/Third Party হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
Investor দের জন্য আলাদা নীতিমালা অনুসরণ করা হবে। যা চুক্তিপত্রে উল্লেখিত থাকবে।

৪.  ব্যবসায়ের সকল পরিকল্পনায় প্রত্যেক অংশীদারদের উপস্থিতি এবং মতামত বাধ্যতামূলক। অন্যথায় এটি একটি বৈধ পরিকল্পনা হিসেবে পরিগণিত হবে না।

৫.  ব্যবসায়িক স্বার্থ ব্যতীত ব্যক্তি স্বার্থে কখনোই ব্যবসায়ের সম্পদ ব্যবহার করা যাবে না।

৬.  প্রত্যেক সদস্যের নামে একটি করে ব্যাংক হিসাব থাকবে এবং প্রত্যেকে উক্ত ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ব্যবসায়ে মূলধন আনয়ন এবং উত্তোলন করবে।

৭.  প্রত্যেক সদস্য তার নিজ ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মূলধন জমা করবে এবং ব্যাংক হিসাবের চেক বই এবং এটিএম কার্ড ব্যবসায়ের লকারে সংরক্ষিত থাকবে। পিন নম্বর থাকবে যার যার কাছে।

৮.  ব্যবসায়ে মূলধনের ঘাটতি দেখা দিলে প্রথমেই তা অংশীদারদের মূলধন হিসাবের মাধ্যমে আনয়ন করতে হবে। এটি অতিরিক্ত মূলধন হিসেবে বিবেচিত হবে। অতিরিক্ত মূলধনের উপর কিছুটা আর্থিক সুবিধা পাবে। অতিরিক্ত মূলধন হিসেবে আনয়ন সম্ভব না হলে তবে তা ৩য় পক্ষের নিকট হতে ঋণ আকারে বা Investor হিসেবে নিতে হবে।

৯.  ব্যবসায় শুরুর প্রথম ছয় মাস ব্যবসায় থেকে কোন বেতন-ভাতা বা আর্থিক সুবিধাদি প্রদান করা হবে না। এটি ব্যবসায়ের মূলধন বাড়ানোর স্বার্থে।

১০.  ছয়মাস পূর্ণ হওয়ার পর ব্যবসায় থেকে নির্দিষ্ট পরিমান শুধু বেতন বাবদ আর্থিক সুবিধা প্রদান করা হবে। ১ বছর পূর্ণ হওয়ার পর অংশীদারদের প্রাপ্য লাভ-লোকসান সমানভাবে বণ্টিত হবে।

১১.  ব্যবসায়ের সম্পূর্ণ লাভ কখনোই সদস্যদের মাঝে ১০০% বণ্টিত হবে না। ৫০% সঞ্চিতি আকারে ব্যবসায়িক তহবিলে জমা থাকবে, ব্যবসায়ের ভবিষ্যত সম্প্রসারণের জন্য। বাকি টাকা সদস্যদের মধ্যে সমানভাবে বণ্টিত হবে।

১২.  ব্যবসায়ে কোন লোকসান দেখা দিলে তা অংশীদারদের সমানভাবে ভাগ করে নিতে হবে।

১৩. ব্যবসায়ের লাভ-লোকসানের হিসেব প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর করা হবে। প্রতি বছরের ৩০শে জুন এবং ৩১শে ডিসেম্বর তারিখে এটি করা হবে এবং প্রত্যেক অংশীদার কর্তৃক তা নিরীক্ষিত হবে।

১৪.  কোন অংশীদার কর্তৃক অংশীদারগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি করা বা চুক্তিপত্রের খেলাপ করা অথবা ব্যবসায়ের আচরণবিধি লঙ্ঘন করা অমার্জনীয় অপরাধ। এরুপ ঘটলে তাকে ব্যবসায় থেকে বহিস্কার করা অথবা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৫.  ব্যবসায়ের প্রত্যেক অংশীদার যেমন একদিকে ব্যবসায়ের মালিক ঠিক তেমনি ব্যবসায়ের একেকজন কর্মী হিসেবে ব্যবসায়ের সকল কাজে সমানভাবে যোগদান করতে বাধ্য থাকবে।
কাজের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা, ব্যবসায়িক শিষ্টাচার, জবাবদিহিতা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

১৬.  ব্যবসায় শুরুর প্রথম ৩ বছরের মধ্যে কোন অংশীদার ব্যবসায় থেকে চলে যেতে চাইলে তাকে শুধু তার মূলধন ফেরত দেওয়া হবে। কোন ধরনের লাভের অংশ সে পাবে না। উপরন্তু ব্যবসায়ে কোন লস হলে তার অংশটুকু তার মূলধন হিসাব থেকে বাদ যাবে।

১৭. ব্যবসায়ে কমপক্ষে ৩ জন অংশীদার সম্মত থাকলে তা বিলোপ সাধন ঘটবে না। অন্যথায়, কারবার গুটিয়ে নেওয়া হবে। তখন ব্যবসায়ের পূনর্মূল্যায়ন ঘটবে এবং ব্যবসায়ের যাবতীয় মূলধন, সম্পত্তি ও দায় সমানভাবে অংশীদারদের মধ্যে বণ্টিত হবে।

১৮.  ব্যবসায় হতে কোন অংশীদার সেচ্ছ্বায় অবসর গ্রহণ করতে চাইলে তাকে অবশ্যই তিনমাস পূর্বে লিখিত দরখাস্ত দিতে হবে। অন্যথায়, সে লাভ থেকে বঞ্চিত হতে পারে।

১৯.  ব্যবসায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার (কমপক্ষে ৩ বছর) পর কোন অংশীদার ব্যবসায় থেকে টাকা উত্তোলন করতে চাইলে সকলের সম্মতিক্রমে তা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। তবে এ উত্তোলনের উপর চার্জ ধার্য করা হবে।

২০.  ব্যবসায়ের/চুক্তিপত্রের যেকোন প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সংকোচন সকলের সম্মতিক্রমে হতে হবে।

২১.  ব্যবসায়ের মূলধন নিজস্ব ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সংরক্ষিত হলেও Profit Account & Reserve Fund যৌথ হিসাবের মাধ্যমে সংরক্ষিত থাকবে।